সততা বলতে আপনি কি বোঝেন? না, পাঠ্য বইতে তার যে
ভারী ভারী সংজ্ঞা দেওয়া থাকে তার কথা মোটেই বলছি না। জীবনে আপনি যে কাজ করছেন, যা ভাবছেন- তা কেন করছেন তার সঠিক উত্তর নিশ্চয় আছে আপনার
কাছে?
আচ্ছা এসব কথা যদি বাদ-ও দিই সারাদিনে নিজেকে কতটা সত্যি
কথা বলেন সেটা নিশ্চয় আপনার জানা... আমার এ বিষয়ে নিজের ওপর যথেষ্ট আস্থা ছিল। আর
সেটা না থাকার-ও কোনো কারণ নেই। সহজ কথায় নিজের ভালো লাগা মন্দ লাগা কে আর পাঁচ
জনের সামনে বলতে পারা তো খুব কঠিন কাজ নয়। আমি জীবনে কোন সিদ্ধান্ত কি ভেবে নিয়েছি
তাও আমি জানি- অতএব আমি অন্তত নিজের কাছে সৎ। কিন্তু এই পালাটাই সম্পূর্ণ বদলে যায়
যখন ভাবনার ফোকাস টা আমি থেকে ‘আমরা’-য় গিয়ে হাজির হয়। ‘আমরা’ –মানে মানুষেরা সৃষ্টির আদি থেকেই প্রবণতা দেখিয়েছি
গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বাঁচার। সেই গোষ্ঠী-ই তৈরি করেছে ‘সমাজ’
– আর সেই সমাজে চরে খাওয়া সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের
ধ্যান ধারণায় পুষ্ট হয়েছে কিছু নিয়ম, রীতি-নীতি... যা মেনে নেওয়ার কোন দায় সকলের নেই। কিন্তু সেই নিয়মাবলী যদি
মানুষের ক্ষতি করে, তাহলে চিন্তাশীল যেকোন মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হওয়া উচিত
নিজের মতো করে তার প্রতিবাদ করা। খুব সাধারণ ভাষায় একেই বোধহয় সমাজ সচেতনতা বলে।
এই যেমন এখন প্রতি রোব্বার আমির খান হাজির হচ্ছেন আমাদের সমাজের মূলে বসে
থাকা হাজারো সমস্যার মধ্যে কিছু সমস্যা নিয়ে। যার বেশ কিছু হয়তো আপনি আমি আগে ভেবেছি, আবার অনেক কিছুই নতুন। সেখানে কন্যা ভ্রূণ হত্যা থেকে শুরু করে প্রতিবন্ধী
বাচ্চাদের শিক্ষাব্যবস্থা সব নিয়েই আলোচনা চলছে।
আমরাও তাতে সহমত জানাচ্ছি -- কিন্তু সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে কোন পদক্ষেপ-ই কেন নিইনি সেই প্রশ্ন করা টা কি খুব অন্যায় হবে। আমার কাছে উত্তর ছিল সময় হয়নি—সময় পাইনি। কিন্তু ফেসবুকে Satyameva Jayate-র সাইট লাইক করা থেকে শুরু করে তার update পড়া বা অনুষ্ঠানের শেষে তাদের দেওয়া নম্বরে sms পাঠিয়ে দেওয়া সেগুলো তো বেশ সময় বের করে করছি- কাজেই হাতে সময় নেই বলাটা মনে হয় বাতুলতা... প্রশ্ন হল এতে সমস্যা কতটা সমাধান হচ্ছে! সমস্যা গুলো যদি জানা হয় তাহলে তার সমাধানের চেষ্টায় গতরে এতো ব্যথা কেন? ব্যথাটা যদি গতরে হত তাহলে হয়তো গলা বাজিয়ে নিজের গা বাঁচানো সহজ হত। মুশকিলটা হল ব্যথা আমাদের মানসিকতায়। সেখানে আমরা জড়। কন্যা ভ্রূণ হত্যা তো অনেক বড় সমস্যা, সামান্য অটোচালক কে ‘দাদা চলন্ত গাড়িতে বিড়িটা খাবেন না’—এটুকু কথা বলার সাহসও আমাদের নেই। পরিবর্তে আমরা নিজের নাকে রুমাল দিই। এটা অনেকটা নিজের বাড়ির দৃশ্যমান জায়গা পরিষ্কার রেখে বাকিটা দরজার কোণে লুকনোর চেষ্টার মতো ব্যাপার। তা প্রতিবাদে আমাদের এতো ভয় কেন? জীবনের শান্তি নষ্ট হবে। সুখে থাকতে ভুতে কিলোতে কে চায়... আমার তো কোন সমস্যা নেই কাজেই যা করছি যথেষ্ট। তা বেশ! সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণ যেদিন ভৌতিক ঘটনা ছিল আর মেয়েদের ভোটাধিকার ছেড়ে দিন, লেখাপড়ার অধিকার ও ছিল না, সেদিনও পৃথিবী কিন্তু শান্ত-ই ছিল। কিছু মানুষ যদি তাদের বিরক্তি প্রকাশ না করতো, প্রতিবাদ না জানাতো তাহলে হয়তো আজও সেই বোঝা আমাদের বহন করে বেড়াতে হতো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিও খুব সুখের নয়। আজ তো আমরা এতোটাই শান্তিপ্রিয় যে বোম পড়ার ঘটনাতেও দু’মিনিট নীরবতা পালন করে শান্ত হয়ে যাই।
আমরাও তাতে সহমত জানাচ্ছি -- কিন্তু সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে কোন পদক্ষেপ-ই কেন নিইনি সেই প্রশ্ন করা টা কি খুব অন্যায় হবে। আমার কাছে উত্তর ছিল সময় হয়নি—সময় পাইনি। কিন্তু ফেসবুকে Satyameva Jayate-র সাইট লাইক করা থেকে শুরু করে তার update পড়া বা অনুষ্ঠানের শেষে তাদের দেওয়া নম্বরে sms পাঠিয়ে দেওয়া সেগুলো তো বেশ সময় বের করে করছি- কাজেই হাতে সময় নেই বলাটা মনে হয় বাতুলতা... প্রশ্ন হল এতে সমস্যা কতটা সমাধান হচ্ছে! সমস্যা গুলো যদি জানা হয় তাহলে তার সমাধানের চেষ্টায় গতরে এতো ব্যথা কেন? ব্যথাটা যদি গতরে হত তাহলে হয়তো গলা বাজিয়ে নিজের গা বাঁচানো সহজ হত। মুশকিলটা হল ব্যথা আমাদের মানসিকতায়। সেখানে আমরা জড়। কন্যা ভ্রূণ হত্যা তো অনেক বড় সমস্যা, সামান্য অটোচালক কে ‘দাদা চলন্ত গাড়িতে বিড়িটা খাবেন না’—এটুকু কথা বলার সাহসও আমাদের নেই। পরিবর্তে আমরা নিজের নাকে রুমাল দিই। এটা অনেকটা নিজের বাড়ির দৃশ্যমান জায়গা পরিষ্কার রেখে বাকিটা দরজার কোণে লুকনোর চেষ্টার মতো ব্যাপার। তা প্রতিবাদে আমাদের এতো ভয় কেন? জীবনের শান্তি নষ্ট হবে। সুখে থাকতে ভুতে কিলোতে কে চায়... আমার তো কোন সমস্যা নেই কাজেই যা করছি যথেষ্ট। তা বেশ! সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণ যেদিন ভৌতিক ঘটনা ছিল আর মেয়েদের ভোটাধিকার ছেড়ে দিন, লেখাপড়ার অধিকার ও ছিল না, সেদিনও পৃথিবী কিন্তু শান্ত-ই ছিল। কিছু মানুষ যদি তাদের বিরক্তি প্রকাশ না করতো, প্রতিবাদ না জানাতো তাহলে হয়তো আজও সেই বোঝা আমাদের বহন করে বেড়াতে হতো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিও খুব সুখের নয়। আজ তো আমরা এতোটাই শান্তিপ্রিয় যে বোম পড়ার ঘটনাতেও দু’মিনিট নীরবতা পালন করে শান্ত হয়ে যাই।
সত্যি অনেকক্ষণ আজেবাজে বকে চলেছি – কিচ্ছু না, নিজের জীবনের কিছু বিরক্তি থেকে। আসলে সব সমস্যা
গুলোই কোনো না কোনো ভাবে একে অন্যের সাথে জড়িত। একটা ঘটনা বলার চেষ্টা করি, যদি তাতে মনটা কিছুটা হাল্কা হয়- আমার এক কলিগ আমায় একদিন
জানালো তার ছেলের দেখাশোনার জন্যে সে তেরো বছরের একটা মেয়ে কে কাজে রেখেছে কিন্তু
সেই মেয়ে ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছে – কিভাবে? ছেলেকে নোংরা নোংরা কথা শিখিয়েছে, এমনকি ছেলের যৌনাঙ্গেও এমন কিছু করেছে যা ও আমায় বলার আগেই
কেঁদে ফেললো... ‘তাহলে এখন কি করবে?’ জিজ্ঞাসা করায় বললো মেয়েটা কে আচ্ছা করে পিটিয়েছে আর ওকেই
আপাতত কাজে রেখেছে। আমি ‘ও’—‘আচ্ছা’—‘সেইতো’ দিয়ে শান্তিপূর্ণ বাক্যালাপ সারলাম। কিন্তু সেই থেকে মনের
মধ্যে একটা খটকা লেগে রয়েছে... প্রথমত ওরা শিশুশ্রম করাচ্ছে, তার ওপর মেয়েটির কোন রকম counseling না করিয়ে ওকে পিটিয়েছে সবশেষে সেই মেয়েকেই কাজে রেখে child abuse কে আশকারা দিচ্ছে ... মানে আমি আমার কলিগের সাথে
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে গিয়ে সমাজের অনেক গুলো স্তরের সমস্যাকে প্রশ্রয়
দিলাম... হ্যাঁ, আজকে বুঝতে পারলাম যে আজও আমি সত্যি কথা সহজ ভাবে স্বীকার করতে
শিখিনি... ভালো না লাগা কে জানিয়ে দিতে পারিনি... অপরাধ বোধ তাই পেছনে সর্বদাই
ধাওয়া করে চলেছে...
No comments:
Post a Comment